শনিবার, ৪ মে, ২০২৪

কুষ্টিয়া জেলা পুলিশ সুপারের দৃষ্টি আকর্ষণ রক্তাক্ত জনপদ উজানগ্ৰাম ইউনিয়নের মানুষ শান্তি চায়

জাহাঙ্গীর খাঁন, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার: কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ১০ নম্বর উজান গ্রাম ইউনিয়নের বিত্তিপাড়া, সোনাইডাঙ্গা, উজানগ্রাম, গজনাইপুর, মাধপুর, ও মহিষাডাঙ্গা গ্রামের মানুষ এক আতঙ্কের জনপদে বসবাস করছে। গত ঈদুল ফিতরের পর থেকে এই জনপদে মারামারি লেগেই আছে। যেকোনো সময় বড় ধরনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে প্রাণনাশের আশঙ্কা করছে এলাকার মানুষ। এই পরিস্থিতির আলোকে  পত্রিকার প্রতিবেদক সরজমিনে ঘুরে এসে যে প্রতিবেদন তৈরি করেছে, তা কুষ্টিয়া সদর আসনের মাননীয় জাতীয় সংসদ সদস্য জনাব মাহবুব-উল আলম হানিফ এমপি এবং জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সেক্রেটারি সহ কুষ্টিয়া শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জনাব আতাউর রহমান আতা সহ পুলিশ প্রশাসন পাঠক ও সুধী সমাজের সামনে তুলে ধরা হলো।

উজানগ্রাম ইউনিয়ন বাসি শান্তি চাই, রাতে তারা আপন ঘরে ঘুমোতে চায়। সংঘর্ষে জড়ানো দুই পক্ষকে এক জায়গায় বসিয়ে সংঘাত মিটিয়ে শান্তির ভূমিতে পরিণত করার লক্ষ্যে প্রতিবেদনটি  তুলে ধরা হলো। গত ০১/০৫/২০২৪ ইং তারিখে বিত্তিপাড়া সহ উল্লেখিত গ্রামগুলোতে আমরা প্রতিবেদক টিম সরজমিনে যায়। বিভিন্ন পেশা শ্রেণীর মানুষ সহ সাধারণ মানুষের মুখোমুখি হই। তারা সবাই বলেন, বিত্তিপাড়া সহ ৬টি গ্রামে একই রাজনৈতিক দলের দুটি গ্রুপ। এক গ্রুপের প্রধান উজানগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুবক্কর, অন্য গ্রুপের প্রধান হোসেন মেম্বর। রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব, প্রভাব প্রতিপত্তি নিয়ে এই দুটি গ্রুপের সৃষ্টি।আবুবক্কর রাজনৈতিক ক্ষমতা ও পুলিশ প্রশাসনের দাপটে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে রেখেছে। সবকিছু দখল করে নিজের প্রভাব বিস্তার করে চলেছে। অপরদিকে হোসেন মেম্বার গ্রুপের মানুষ তাদের ক্ষমতা প্রভাব বিস্তারের চেষ্টায় মরিয়া। যার ফলে দুই গ্রুপের মারামারি সংঘর্ষে এই গ্রামগুলো আতঙ্কের জনপদে পরিণত হয়েছে। উজানগ্রাম ইউনিয়নের ৪ নাম্বার ওয়ার্ডের মেম্বার ইস্কান্দার আলি খাঁ বলেন, আমরা এই পরিস্থিতির অবসান চাই শান্তি চাই। এই মারামারিতে পাল্টাপাল্টি মামলা হয়েছে। মানুষ ঘর ছাড়া, মানুষ আতঙ্কে ভুগছে, কখন কি হয় বলা মুশকিল এর মীমাংসা হওয়া  দরকার। আতা ভাই একটা মীমাংসা করে দিতে পারেন। মহিষাডাঙ্গা দারুল উলুম  মাদ্রাসার সভাপতি জনাব মতিয়ার রহমান বলেন, আমরা মারামারি চায়না, শান্তি চাই। দোকানদার রবিউল ইসলাম বলেন, এই মারামারির মীমাংসা না হলে,যে কোন সময় বড় ধরনের সংঘর্ষ হতে পারে। এতে যে কোন পক্ষের প্রাণহানি হয়ে যেতে পারে। বিত্তিপাড়া বাজারের বণিক সমিতির সাবেক সভাপতি শাহিনুজ্জামান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই দুটি গ্রুপের দ্বন্দ্ব ও সংঘাত চলমান। যার ফলে সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত। রাতে মানুষ বাড়িতে ঘুমোতে পারে না। আমি এ অবস্থার পরিবর্তন চাই, শান্তি চাই। নেতারা উদ্যোগ নিয়ে প্রশাসনের সহযোগিতায় শান্তি প্রতিষ্ঠা করুক। এ অঞ্চলের জন্য আমি এটা কামনা করি। সাধারণ মানুষের জান মালের যাতে ক্ষতি না হয়, এজন্য ইবি থানার কর্তব্যরত অফিসার ইনচার্জ জনাব মামুন রহমানের এক বিশেষ সাক্ষাতে তিনি বলেন, এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য আমরা প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।  এখানে আমরা কোন পক্ষ বা বিপক্ষের হয়ে কাজ করছি না। সংঘর্ষের সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক না কেন তাদের কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা যত দ্রুত সম্ভব তাদের গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করবো। এ ব্যাপারে হরিনারায়নপুর পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ ইউসুফ আলী শাহীন ও তার সঙ্গীও ফোর্স সার্বক্ষণিক কাজ করছে। এছাড়াও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দিন রাত ২৪ ঘন্টা আমাদের প্রশাসনিক টহল অব্যাহত আছে।  এদিকে সংবাদ সংগ্রহকালীন হোসেন মেম্বারের বাড়িতে যেয়ে কাউকে না পেয়ে গেটে অঙ্কিত মেম্বারের ছেলে জনির নাম্বারে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমার পিতা বৃদ্ধ মানুষ, তিনি বাড়িতে থাকেন না, ঢাকায় থাকেন। তিনি আরো বলেন, আমরা বাড়িতে থাকি না, বিত্তিপাড়ার সব মানুষ আমাদের আপনজন। আমরা মারামারি চাইনা, আমরা শান্তি চাই।এলাকার একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তারকারী আবুবক্কর কে খুঁজে না পেয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমি মারামারি কিংবা সংঘর্ষ চায়না, যেটা হয়েছে অনাকাঙ্ক্ষিত। আবারো হলে বড় ধরনের ঘটনা ঘটবে। প্রাণহানিও হতে পারে, আমি এসব কিছুই চাইনা। আমি শান্তি চাই। এজন্য জেলা পুলিশ প্রশাসন উদ্যোগ নিলে আমি স্বাগত জানাবো। বিত্তিপাড়ার মানুষ রাতে শান্তিতে ঘুমােক, এজন্য পুলিশ প্রশাসন যেখানে বসে মীমাংসা করবে, আমি সেখানেই উপস্থিত থেকে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে চাই। উজানগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ সানোয়ার হোসেন মোল্লা মুঠো ফোনে বলেন,আমি ইউনিয়নের মানুষকে ভালোবাসি। তারা মারামারি ও সংঘর্ষে জড়িয়ে অশান্তিতে থাকুক আমি তা চাইনা। আমি ইউনিয়নবাসীর শান্তি চাই। এজন্য তৃতীয় পক্ষের উদ্যোগে পুলিশ প্রশাসনের সহায়তাই একটি শান্তি সমাবেশ করলে খুবই ভালো হয়। এজন্য আমার পক্ষ থেকে সব সহযোগিতা করবো। পরিশেষে বলা যায় হোসেন মেম্বার গ্রুপের পরিবারের মেয়েরা চরম ভয় ভীতির মধ্যে জীবনযাপন করছে। এই পরিস্থিতির অবসান ঘটুক, শান্তির সুবাতাস প্রবাহিত হোক, এই শুভ কামনায় সরকার দলীয় রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ সহ কুষ্টিয়া জেলা পুলিশ সুপারের সুদৃষ্টি আকর্ষণ করা যাচ্ছে।


শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: